Hot Posts

6/recent/ticker-posts

//বৈরুতে ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় //হিজবুল্লাহর কমান্ডারসহ নিহত ৩৭//

 

''বৈরুতে ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় হিজবুল্লাহর কমান্ডারসহ নিহত ৩৭''

হিজবুল্লাহর সদস্যদের ব্যবহার করা পেজার ও ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরণ ঘটার পর এ হামলা গোষ্ঠীটির জন্য আরেকটি বড় ধাক্কা।লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় হিজবুল্লাহর এক শীর্ষ কমান্ডার ও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সদস্যসহ অন্তত ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তিন শিশু ও সাত নারী রয়েছেন।গত প্রায় এক বছরে ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে হিজবুল্লাহর সংঘাতে এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা।

লেবাননের পরিবহনমন্ত্রী আলি হামিহ ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবারের এ হামলার পর থেকে অন্তত ২৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন।ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ও লেবাননের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ ড্রোন হামলায় হিজবুল্লাহর অভিজাত এক ইউনিটের কমান্ডার ইব্রাহিম আকিল অন্য কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সদস্যসহ নিহত হয়েছেন।শনিবার এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ আকিলের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে তাকে তাদের 'অন্যতম শীর্ষ নেতা' বলে অভিহিত করেছে; তবে তার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানায়নি। তারা জানায়, এ হামলায় আকিলসহ তাদের ১৬ জন সদস্য নিহত হয়েছেন।

পরে দ্বিতীয় আরেক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানায়, আকিল বৈরুতের দাহিই এলাকায় 'ইসরায়েলিদের প্রতারণাপূর্ণ হত্যার' শিকার হয়েছেন।তারা আরও জানায়, গাজা যুদ্ধ চলাকালে ২০২৪ সালের প্রথমদিক পর্যন্ত রাদোয়ান স্পেশাল ফোর্সেসের সামরিক অভিযান তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা আরেক শীর্ষ কমান্ডার আহমেদ ওয়াহবিও এ হামলায় নিহত হয়েছেন।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ হামলায় অন্তত ৩৭ জন নিহত হয়েছেন আর মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।এর আগে মন্ত্রণালয়টি জানিয়েছিল, এ হামলায় অন্তত ৬৬ জন নিহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে নয়জনের অবস্থা সঙ্কটজনক।লেবাননের দ্বিতীয় আরেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, একটি ভবনের গ্যারজ খোলার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে ড্রোন থেকে বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হলে হিজবুল্লাহর অন্তত ছয় কমান্ডার নিহত হন। বিস্ফোরণে ভবনটির নিচের অংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়, সেখানে আকিল অন্য কমান্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন।

ঘটনার সময়ত তীব্র একটি শীসের মতো শব্দ ও পরপর বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওভ গ্যালান্ট সামাজিক মাধ্যম এক্স এ এক পোস্টে বলেছেন, "উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের নতুন পর্বের পদক্ষেপের ক্রম অব্যাহত থাকবে।"

গত সপ্তাহে গ্যালান্ট জানিয়েছিলেন, ইসরায়েল উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে যুদ্ধের এক নতুন পর্ব শুরু করেছে।গত বছরের অক্টোবরে গাজায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে রকেট হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। তারপর থেকে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলার মধ্যে ওই অঞ্চল থেকে দুই দেশের হাজার হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

১৮ বছর আগে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়ানো ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের নাগরিকরা যেন উত্তর ইসরায়েলে নিরাপদে ফিরতে পারে তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনের তারা শক্তি প্রয়োগ করবে।ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী আকিলকে হিজবুল্লাহর রাদোয়ান স্পেশাল ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বলে বর্ণনা করেছে। আকিলকে আরও ১০ জন জ্যেষ্ঠ কমান্ডারসহ হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।আকিল হিজবুল্লাহর শীষ সামরিক কাউন্সিলের সঙ্গে বসে বৈঠক করছিলেন বলে লেবাননের কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।

পরপর দুই দিন হিজবুল্লাহর সদস্যদের ব্যবহার করা পেজার ও ওয়াকিটকিতে ঘটা বিস্ফোরণে অন্তত ৩৯ জন নিহত ও কয়েক হাজার মানুষ আহত হন। এরপর এ ড্রোন হামলা হিজবুল্লাহর জন্য আরেকটি ধাক্কা। পেজার ও ওয়াকিটকি হামলাগুলোর পেছনেও ইসরায়েল আছে বলে ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয়। কিন্তু এসব হামলার সঙ্গে নিজেদের জড়িত থাকার কথা ইসরায়েল স্বীকার বা অস্বীকার, কোনোটাই করেনি।


Post a Comment

0 Comments